Printer

Description

Printer

---

প্রিন্টার কম্পিউটার সিস্টেমের একটি গুরুত্বপূর্ণ আউটপুট ডিভাইস। যার মাধ্যমে গ্রাফিক্স, ইমেজ এবং টেক্সট ডকুমেন্ট কাগজে অথবা অন্য কোনো কিছুর উপরে প্রিন্ট করে বা ছাপা আকারে বের করা।

প্রিন্টার একটি ধীরগতি আউটপুট ব্যবস্থা। প্রিন্টারের মান কী রকম হবে তা নির্ভর করে প্রিন্টারের রেজুলেশনের উপর। বেশি রেজ্যুলেশনের প্রিন্টার নিখুঁতভাবে প্রিন্ট করে থাকে। প্রিন্টারের রেজ্যুলেশন পরিমাপক একক ডিপিআই (DPI)। DPI এর পূর্নরূপ হলো Dot Per Inch । প্রিন্টার একটি অফ লাইন ডিভাইস। বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের প্রিন্টার পাওয়া যায় যেগুলাের আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্য রয়েছে।

প্রিন্টারের প্রকারভেদ 

প্রিন্টারের প্রযুক্তি ও ব্যবহার এর ওপর নির্ভর করে প্রিন্টার কে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে

১. ইমপ্যাক্ট প্রিন্টার (Impact Printer)

২. নন ইমপ্যাক্ট প্রিন্টার (Non-Impact Printer)

১. ইমপ্যাক্ট প্রিন্টার (Impact Printer):- প্রত্যেক প্রিন্টারে প্রিন্ট করার জন্য একটি হেড থাকে যে প্রিন্টারে কাগজে কোনো কিছু প্রিন্ট করার সময় প্রিন্টারের হেডটি কাগজ কে স্পর্শ করে, তাকে ইমপ্যাক্ট প্রিন্টার বলে । প্রিন্ট করার সময় প্রিন্টারের হেডটি প্রিন্টারের মধ্যে থাকা কাগজের ওপরের রিবনে চাপ প্রয়োগ করে এবং শব্দের উৎপন্ন হয়। এই প্রিন্টারে শুধুমাত্র সাদা-কালো প্রিন্ট করা যায় এবং প্রিন্টআউট খুব একটা পরিস্কার আসে না। এই ধরনের প্রিন্টারের উদাহরণ হল – ডট ম্যাট্রিক্স প্রিন্টার, লাইন প্রিন্টার, ডেইজি হুইল প্রিন্টার

২. নন ইমপ্যাক্ট প্রিন্টার (Non-Impact Printer):- ইমপ্যাক্ট প্রিন্টারের মতো নন ইমপ্যাক্ট প্রিন্টারেও প্রিন্ট করার জন্য একটি হেড থাকে। যে প্রিন্টারে কাগজের ওপরে কোনো লেখা বা ছবির প্রিন্ট নেওয়ার সময় প্রিন্টারের হেডটি কাগজ কে স্পর্শ করে না, তাকে নন ইমপ্যাক্ট প্রিন্টার বলে । এই ধরনের প্রিন্টারে শব্দের সৃষ্টি হয় না এবং প্রিন্টিং কোয়ালিটি উন্নতমানের অর্থাৎ লেখা বা ছবির প্রিন্ট আউটপুট পরিস্কার আসে। এই ধরনের প্রিন্টারের উদাহরণ হল – ইঙ্কজেট, লেজার,থার্মাল প্রিন্টার

ইমপ্যাক্ট প্রিন্টার (Impact Printer)

ডট ম্যাট্রিক্স প্রিন্টার (Dot Matrix Printer):- ইহা এক ধরনের ইমপ্যাক্ট প্রিন্টার। এই ধরনের প্রিন্টারে প্রিন্টিং হেডে কিছু পিন থাকে। প্রিন্ট করার সময় হেডটি কালিযুক্ত রিবনের বা ফিতার ওপরে আঘাত করে কাগজের ওপর অক্ষর ফুটিয়ে তোলে। হেডে থাকা পিন দিয়ে ছোটো ছোটো ডট-এর সাহায্যে একটি করে ক্যারেক্টার প্রিন্ট হয়। এর ফলে কাগজের ওপরে প্রয়োজনীয় অক্ষরের প্রতিলিপি তৈরি হয়। কাগজের ওপর ঘর্ষণজনিত কারনে প্রচুর শব্দের সৃষ্টি হয়।

লাইন প্রিন্টার (Line Printer):- ইহাও এক ধরনের ইমপ্যাক্ট প্রিন্টার। এই ধরনের প্রিন্টার গুলি একবারে একটি সম্পূর্ণ লাইন প্রিন্ট করতে পারে। এই প্রিন্টারেও প্রিন্টিং এর সময় শব্দের সৃষ্টি হয়।

ডেইজি হুইল প্রিন্টার (Daisy Wheel Printer):- ডেইজি হুইল প্রিন্টার এক ধরনের ইমপ্যাক্ট প্রিন্টার। এই প্রিন্টার শুধুমাত্র অক্ষর ও চিহ্নগুলি প্রিন্ট বা মুদ্রণ করতে পারে, কোনো ছবি বা গ্রাফিক প্রিন্ট করতে পারে না।

নন ইমপ্যাক্ট প্রিন্টার (Non-Impact Printer)

ইঙ্কজেট প্রিন্টার (Inkjet Printer):- ইঙ্কজেট প্রিন্টার এক ধরনের নন ইমপ্যাক্ট প্রিন্টার। এই প্রিন্টারে লিকুইড অর্থাৎ তরল কালি ব্যবহার করা হয়। সালা-কালো, রঙিন সবধরনের প্রিন্ট এই প্রিন্টারে করা সম্ভব। সাদা-কালো প্রিন্ট এর জন্য কালো কালি (Black Ink ) এবং কালার বা রঙিন প্রিন্ট করার জন্য তিনটি কালার নীল (Cyan), ম্যাজেন্টা (Magenta ), হলুদ (Yellow ) ব্যবহার করা হয়। প্রত্যেকটি কালার কার্টিজ (Cartridge )-এর নিচে ছিদ্রযুক্ত নজেল বা নল থাকে। কালির ফোঁটা সেই লজেল বা নল দিয়ে বেরিয়ে কাগজের ওপর বিভিন্ন লেখা বা ছবি প্রিন্ট হয়। এই প্রিন্টার এর প্রিন্ট কোয়ালিটি খুব উন্নতমানের এবং দ্রুত প্রিন্ট হয়। শব্দের সৃষ্টি হয় না। তবে প্রিন্টারের হেডটি ইমপ্যাক্ট প্রিন্টারের মতো মজবুত বা শক্তিশালী নয়, বেশি প্রিন্ট হয়ে গেলে বা কিছুদিন ব্যবহার হয়ে গেলে হেডটি নষ্ট হয়ে যাবার সম্ভাবনা থাকে। এই প্রিন্টারের জন্য যে কালি গুলি ব্যবহার করা হয় সেগুলির দাম তুলনামূলক বেশি।

লেজার প্রিন্টার (Laser Printer):- ইহা এক ধরনের নন ইমপ্যাক্ট প্রিন্টার ( Non-Impact Printer) কোনো লেখা কাগজের ওপর প্রিন্ট করার জন্য এই প্রিন্টারে কার্বন গুঁড়োর মতো গুঁড়ো কালি ব্যবহার করা হয়। এই গুঁড়ো কালি একটি কার্টিজ বা টোনারের মধ্যে ভরা থাকে। এই প্রিন্টারে প্রিন্টআউট কোয়ালিটি উন্নতমানের হয়, প্রিন্টআউট খরচ কম, দ্রুত প্রিন্ট করা যায় এবং স্থায়িত্ব বেশি, তাই এই প্রিন্টারের দামও তুলনামূলক বেশি হয়ে থাকে।

থার্মাল প্রিন্টার (Thermal Printer):- এই প্রিন্টার যেকোনো বিল প্রিন্ট করার জন্য ব্যবহার করা হয়। ইহা এক ধরনের নন-ইমপ্যাক্ট প্রিন্টার।

প্রিন্টারের ইতিহাস 

কম্পিউটারের জনক বলা হয় চার্লস ব্যাবেজ (Charles Babbage –কে )। এরই হাত ধরে  আসে প্রিন্টারের ধারণা এবং সেই ধারণা থেকেই তিনি প্রিন্টার ডিজাইন করেন এবং প্রিন্টার আবিষ্কার হয়।

প্রথম বিদ্যুৎ চালিত প্রিন্টার ছিল ১৯৬৮ সালে জাপানী কোম্পানি এপসন (EPSON) দ্বারা তৈরি করা, যার নাম ছিল EP-101

এরপর HP কোম্পানি ১৯৮৪ সালে এইচ.পি. লেজার জেট (নামে লেজার প্রিন্টার তৈরি করে। এই প্রিন্টার এর গতি তুলনামূলক ভাবে বৃদ্ধি পায় এবং কাজও তুলনামূলক দ্রুত হয়। এরপর প্রিন্টারের প্রচুর ব্যবহার লক্ষ্য করা যায় ফলে ধীরেধীরে বিভিন্ন সংস্থা উন্নতমানের প্রিন্টার তৈরি করতে শুরু করে।

Soft Copy (সফট কপি):- কম্পিউটারে কোন ডকুমেন্টস কে, Soft Copy বলা হয়

Hard Copy (হার্ডকপি):- Printed Output Copy কে Hard Copy বলা হয় 

DPI (Dot Per Inch):- যেকোনো প্রিন্টার এর মান বা কোয়ালিটি