একটি চিপে স্থায়ী ভাবে সংরক্ষিত কিছু তথ্য দিয়ে রম তৈরি। রমের সাহায্যে বিভিন্ন রকমের কাজ হয়ে থাকে। যেমন:
1. কম্পিউটার চালু করা হলে রমে ধরে রাখা তথ্য পর্দায় ফুটে ওঠে
2. রমের প্রধান কাজ হল POST (power On Self Test) কম্পিউটার চালু হওয়ার সাথে সাথে এটি সকল কম্পন্টেট কে চেক করে এবং কোন সমস্যা থাকলে তার জন্য সিগন্যাল প্রদান করে
3. বাধ্যতামূলক ও অপরিবর্তনীয় কিছু নির্দেশও রমে ধরে রাখা হয়
র্যাম এর কাজ কী
কম্পিউটারের মূল প্রাথমিক স্মৃতি বলতে র্যামকে (Primary
Memory) বোঝায়। কি বোর্ড কিংবা অন্য কোনও ভাবে কম্পিউটারে যে তথ্য ও প্রোগ্রামই ঢোকানো হোক না কেন, তা প্রথমে গিয়ে সোজা জমা হয় র্যাম নামক স্মৃতিকক্ষে। কিন্তু কম্পিউটার বন্ধ করে দেওয়া মাত্র ঐ স্মৃতিকক্ষে সঞ্চিত তথ্য ও প্রোগ্রাম নষ্ট হয়ে যায় বা হারিয়ে যায়। অর্থাৎ যতক্ষণ কম্পিউটার চালু থাকে, ততক্ষণই কেবলমাত্র র্যাম তথ্য ও প্রোগ্রাম সংরক্ষিত রাখা যায়, কম্পিউটার বন্ধ হলেই তার আর অস্তিত্ব থাকে না। সেই কারণেই এই স্মৃতিকে উদ্বায়ী বা অস্থায়ী বা অস্থিতিশীল স্মৃতি বলা হয়ে থাকে। অনেকগুলি ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট বা আই সি দিয়ে র্যাম তৈরি হয়। মূলত বিভিন্ন তথ্য ও বিন্যাসের প্রণালী (প্রোগ্রাম)-কে অস্থায়ী ভাবে সংরক্ষণ করার কাজে এটিকে ব্যবহার করা হয়
সহায়ক স্মৃতিগুলো কী কী
কম্পিউটারের সহায়ক স্মৃতিতে স্থায়ী ভাবে তথ্য সংরক্ষণ করে রাখা যায়। কম্পিউটার যন্ত্রটির বাইরে এই স্মৃতি ধরে রাখা হয়। কিন্তু তাকে ব্যবহার করা হয় কম্পিউটারের সাহায্যেই। অর্থাৎ এটি তথ্য সংরক্ষণের স্থায়ী মাধ্যম। এ ক্ষেত্রে কম্পিউটার বন্ধ করে দেওয়া হলেও তথ্য নষ্ট হয় না বা হারিয়ে যায় না। ফলে ভবিষ্যতে প্রয়োজন হলেই তথ্য ও প্রোগ্রামকে কম্পিউটারের সাহায্যে ব্যবহার করা যায়। তথ্যকে এ ভাবে সংরক্ষণ করার জন্য নানা ধরনের উপকরণ আছে, যেগুলিকে বলা হয় সেকেন্ডারি স্টোরেজ ডিভাইস। যেমন, ফ্লপি ডিস্ক, হার্ড ডিস্ক, কমপ্যাক্ট ডিস্ক বা সি ডি, ম্যাগনেটিক টেপ ইত্যাদি
ফ্লপি ডিস্ক : নমনীয় প্লাস্টিক জাতীয় বস্তু বা ফ্লেক্সিবেল প্লাস্টিক মেটেরিয়াল দিয়ে ফ্লপি ডিস্ক তৈরি হয়। সেই কারণেই এর নাম ফ্লপি ডিস্ক। এই ডিস্কে পাতলা গোলাকৃতি প্লাস্টিকের উভয় দিকে চৌম্বক পদার্থের আবরণ থাকে, যাতে তথ্য সংরক্ষণ করা হয়। অর্থাৎ, এই আবরণটি রেকর্ডিং সাবস্টেন্সের ভূমিকা পালন করে। এই আবরণের উপরে অতি ক্ষুদ্র অদৃশ্য আকৃতির চৌম্বক গুঁড়ো হিসাবে তথ্য সন্নিবিষ্ট হয় রেকর্ডিং-এর মাধ্যমে। ফ্লপি ডিস্ক বিভিন্ন মাপের বা ব্যাসের হতে পারে। যেমন, ৮ ইঞ্চি, ৫.২৫ ইঞ্চি, ৩.৫ ইঞ্চি। তবে আজকের দিনে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ব্যবহৃত ফ্লপি ডিস্কেরই ব্যাস হয় ৩.৫ ইঞ্চি
হার্ড ডিস্ক
: এটি একটি চৌম্বক ডিস্ক বা ম্যাগনেটিক ডিস্ক, যা আসলে পাতলা বৃত্তাকার ধাতু নির্মিত একটি প্লেট। এই প্লেটটির দু’ দিকেই চৌম্বক বস্তুর আবরণ থাকে। যে হেতু প্লেটটি ধাতু দিয়ে তৈরি, তাই একে হার্ড ডিস্ক বলা হয়ে থাকে। একটি ডিস্ক প্যাকে এ রকম বেশ কয়েকটি ডিস্ক থাকে, দু’টি বা তার বেশি, যেগুলি প্রতি মিনিটে ৫৪০০ বা তার বেশি বার চক্রাকারে ঘোরে। প্রতিটি ডিস্কে বেশ কিছু সমকেন্দ্রিক বৃত্ত থাকে, যেগুলিকে চোখে দেখা যায় না। এদের বলে ট্র্যাক। ডিস্ক প্যাকের সবগুলি তলের একই ব্যাসার্ধ যুক্ত বৃত্তগুলিকে একত্রে বলা হয় সিলিন্ডার বা চোঙ। এই হার্ড ডিস্কের মধ্যে ধাতুর প্লেটগুলির খুব কাছে এক একটি রিড অ্যান্ড রাইট হেড (Read
& Write Head) থাকে যা রেকর্ডিং সাবস্টেন্সের চৌম্বক ধর্মের তারতম্য থেকে তথ্য অনুধাবন এবং সংরক্ষণ করতে পারে
হার্ড ডিস্কে তথ্য লেখার সময় এই যন্ত্রাংশগুলিই খুব সীমিত জায়গার মধ্যে চৌম্বকক্ষেত্র তৈরি করে রেকর্ডিং সাবস্টেন্সের চৌম্বক ধর্মের পরিবর্তন ঘটায়। এই পরিবর্তনকে তারা আবার পরবর্তী কালে তথ্যের আকারে অনুধাবন করতে পারে। এই ভাবে তারা তথ্য সঞ্চয় ও পুনুরদ্ধার করে। এক বার চৌম্বক ধর্মের পরিবর্তন করলে তা বহু দিন একই ভাবে থাকে। এর ফলে সঞ্চিত তথ্য বহু দিন একই ভাবে সঞ্চিত রাখা সম্ভব
পেনড্রাইভ : এটি একটি হাতে বহন যোগ্য মেমরী যা তথ্য এক জায়গা হতে অন্য জায়গায় বহন করা যায়। বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় ও নির্ভরযোগ্য পোরটেবল মেমরী ডিভাইস হল পেনড্রাইভ। বিভিন্ন সাইজের পেনড্রাইভ বাজারে যথাক্রমে ২জিবি, ৪জিবি, ৮জিবি, ১৬জিবি, ৩২জিবি আকারে পাওয়া যায়।
অপটিক্যাল ডিস্ক:
একটি অপটিক্যাল ডিস্ক হল একটি সমতল, সাধারণত গোলাকার ডিস্ক যা বাইনারি ডাটা (বিট) সংকেতে আবদ্ধ করে পিটসরূপে (শূন্যের বা খালির বাইনারি মান, পড়ার সময় প্রতিবিম্বের অভাব হেতু) এবং ল্যান্ডসরূপে (১ বা আছের বাইনারি মান, পড়ার সময় প্রতিবিম্বের জন্য) একটি বিশেষ ধাতু (সাধারণত এ্যালুমিনিয়াম[ দ্বারা তৈরি তলের একপাশে। সংকেতে আবদ্ধ করার ধাতুটি একটি পুরু নিম্নস্ত স্তরের ধাতুর (সাধারনত পলিকার্বনেট) উপর থাকে যা ডিস্কটিকে ভারি করে এবং ধুলো এড়ানোর স্তর তৈরী করে
মেমরী কার্ড:
বিট–বাইট Bit - Byte
বিট–বাইটঃ Measurement Of Data Of The Computer
Computer -এর তথ্য পরিমাপের এককঃ বাইনারী নাম্বার পদ্ধতিতে ব্যবহৃত অংক ০ (শুন্য) এবং ১ (এক) কে Bit বলে। ইংরেজী Binary শব্দের Bi ও Digit শব্দের t নিয়ে Bit শব্দটি তৈরী হয়েছে। কম্পিউটার স্মৃতিতে রক্ষিত 0 ও 1 এর কোড দিয়ে বিভিন্ন রকম তথ্য সংরক্ষিত থাকে। এ কারণে কম্পিউটারের স্মৃতির ধারণ ক্ষমতার ক্ষুদ্র একক হিসাবে Bit শব্দটি ব্যবহৃত হয়। কম্পিউটার এই ০ ও ১ দ্বারা যে বিশেষ পদ্ধতিতে কম্পিটারের কাজ করে তাকে কম্পিটারের যান্ত্রিক ভাষা বলা হয়
Bit, Byte, KB,MB,GB এবং এর মধ্যে সম্পর্ক
কম্পিউটারের স্মৃতিতে বিট, বাইট বা কম্পিউটারের শব্দ ধারণের সংখ্যা দ্বারা ধারণ ক্ষমতা নির্দেশ করা যায়। সাধারনতঃ বাইট দিয়ে স্মৃতির ধারণ ক্ষমতা প্রকাশ করা হয়। তবে বলা দরকার যে বিট হচ্ছে কম্পিটারের সংখ্যা পদ্ধতির ক্ষুদ্রতম একক। এদের মধ্যে সর্ম্পক নিচে তুলে ধরা হলঃ
8 Bit = 1 Byte [1 Byte = 1 Character]
1024 Byte = 1 Kilobyte(KB)
1024 Kilobyte = 1 Megabyte (MB)
1024 Megabyte = 1 Gigabyte (GB)
1024 Gigabyte = 1 Terabyte (TB)
বিট - Bit :- কম্পিউটারের সব সংখ্যাই ০ অথবা ১ যে হেতু মানুষের পাঠযোগ্য ভাষা কম্পিউটার বুঝতে পারে না, তাই কম্পিউটারের বোধযোগ্য করার জন্য কম্পিউটারকে প্রদত্ত সমস্ত নির্দেশই ০ বা ১ – এর মাধ্যমে দেওয়া হয় এরা আমাদের দেওয়া নির্দেশকে কম্পিউটারই তার নিজের বোধযোগ্য ০ বা ১ বা উভয়ের বিভিন্ন সমন্বয়ে রূপান্তরিত করে নেয়। কারণ, কম্পিউটার সব কাজই বৈদ্যুতিন যন্ত্রাংশের সাহায্যে করে। এই বৈদ্যুতিন যন্ত্রাংশগুলির প্রতিটি কেবলমাত্র দু’টি অবস্থানকে বোঝে। এই দু’টি অবস্থান হল অন (On) এবং অফ (Off) কম্পিউটারের কাছে অন মানে ১ (ওয়ান) এবং অফ মানে ০ (জিরো)। কম্পিউটারের ভাষায় একেই (০ এবং ১ ) বিট (Bit) বলা হয়
বাইট - Byte :- কম্পিউটার সমস্ত নির্দেশ, সমস্ত সংখ্যা এবং অক্ষরকেই এই ০ এবং ১ দ্বারা গ্রহণ করে থাকে। এ রকম আটটি বিট –এর সমন্বয়কে বাইট (Byte) বলা হয়ে থাকে
১০২৪টি বাইট নিয়ে ১ কিলোবাইট (Kilobyte বা KB)
১০২৪টি কিলোবাইট নিয়ে ১ মেগাবাইট (Megabyte বা MB)
১০২৪টি মেগাবাইট নিয়ে ১ গিগাবাইট (Gigabyte বা GB)
১০২৪টি গিগাবাইট নিয়ে ১ টেরাবাইট (Terabyte বা TB)
১০২৪টি টেরাবাইট নিয়ে ১ পেটাবাইট (Petabyte বা PB)
১০২৪টি পেটাবাইট নিয়ে ১ ইক্সয়াবাইট (Exabyte বা EB)
১০২৪টি ইক্সয়াবাইট নিয়ে ১ জেট্টাবাইট (Zettabyte
বা ZB)
১০২৪টি জেট্টাবাইট নিয়ে ১ ইয়াট্টাবাইট (Yottabyte
বা YB)
যেহেতু কম্পিউটার এই দুটি সংখ্যা ছাড়া কিছু বোঝে না তাই যে কোন ভাষায় এই কম্পিউটার ব্যবহৃত হতে পারে। শুধু কম্পিউটারকে কোড বুঝালেই হয়ে যায়। যদি ০ এবং ১ এর মাধ্যমে কম্পিউটার পরিচালনা করা না হতো তাহলে আলাদা আলাদা ভাষায় আলাদা কম্পিউটার তৈরি করার প্রয়োজন হতো। এতে কম্পিউটার সহজলভ্য হতো না এতে সকল কাজ কাগজে হাতে করতে হতো
র্যাম কি
RAM (Random Access
Memory) একটি অস্থায়ী (Volatile) স্মৃতি ভান্ডার । Input Device হতে সকল প্রকার তথ্য RAM এ জমা হয়। প্রধান স্মৃতির এ অংশে যখন তখন নতুন তথ্য লেখা যায়, তথ্য পড়া যায় এবং ইচ্ছা করলে তথ্য সমূহ মুছে ফেলা যায়। RAM -এর তথ্য পড়া ও লেখা উভয় কাজই সম্পাদন করা যায় বলে একে লিখন পঠন স্মৃতিও (Read Write Memory) বলা হয়ে থাকে। বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হলে RAM এ রক্ষিত সকল তথ্য মুছে যায়। তাই একে অস্থায়ী স্মৃতি হিসাবে অভিহিত করা হয়
রম কি
ROM (Read Only Memory) একটি স্থায়ী (Non Volatile) স্মৃতি ভান্ডার। প্রধান স্মৃতির এই অংশটি স্থায়ী, অপরিবর্তনীয় ও অধ্বংসাত্বক স্মৃতি। Computer -এ বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দিলেও এই স্মৃতিতে রক্ষিত তথ্য মুছে যায় না। ROM -এ নতুন কিছু সংযোজন, সংশোধন বা পরিবর্তন করা যায় না। এই অংশে লিখিত তথ্য শুধুমাত্র পড়া যায়, কিন্তু লেখা যায় না। তাই একে স্থায়ী স্মৃতি হিসাবে অভিহিত করা হয়